আন্দামানের কটা দিনের বেড়ানোটা আমার কাছে ছয় দিন ধরে অরন্যের সান্নিধ্যে দিবারাত্রি যাপন করা এবং তার সাথে নির্জন সৈকত কে অনেকক্ষণ ধরে নিজের মতন করে একাকী উপভোগ করার এক বিরাট সুযোগ দিয়েছে দুহাত ভরে। অরন্য আর সমুদ্র কে এই ভাবে জন -অরন্যর বাইরে নিজের মতন করে পাবো, সেটা কখনো ভাবতেই পারিনি। তাই এতো দেশ বিদেশ বেড়ানোর পর আন্দামান বেড়ানোটা এক বিশেষ স্থান নিয়েছে আমার অসংখ্য দেশে-বিদেশে বেড়ানো জায়েগার তালিকাগুলির মধ্যে।

তাছাড়া এর সাথে যখন যুক্ত আছে আমার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম! যে সংগ্রামে সিংহভাগে যুক্ত ছিলেন  আমাদের বাঙালী ভাই-বন্ধুরা।এই কথাটা বলার কারণের সাক্ষ্য হোল, সেলুলার জেলের মধ্যে একটি অংশে স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদের নাম তালিকাগুলো দেখে। কারণ বাঙালি শহীদদের নামের প্রায় তিন চারটে তালিকা, তারপরে হোল একটা কি দুটো পাঞ্জাবি শহীদদের নামের তালিকা আর বাকি কিছু  প্রান্তের নাম তালিকা গুলো তে 4-5 শহীদদের  নাম দিয়ে তালিকা বনানো দেখে।  সবচেয়ে আশ্চর্য লাগলো মারাঠী শহীদদের  নাম তালিকা দেখে।  মোটে 2 জন শহীদদের নাম। আর তাদেরকে এতো প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে আন্দামানে যে আমার কাছে  সেটা একেবারেই অবাক কান্ড। এতো বাঙালি শহীদদের শুধুমাত্র নাম তালিকা গুলো তে নাম দিয়ে যে কোন সরকারই খালাস। অথচ আন্দামান এয়ারপোর্ট এর নাম বীর সাভারকর,  সেলুলার জেলে তাঁকে  প্রাধান্য দেওয়া  হয়েছে।  তাঁর ছবির সাথে এখানে আমার ছবি আছে।

আশ্চর্য কান্ড কিন্তু,  যে সরকারই আসুক,  বাঙালিদের সবচেয়ে বেশি অবদান থাকে বলেও, তাদের কোনঠাসা করার চক্রান্ত আমি সর্বত্রই দেখতে পাই। যে হেতু আমার বড়ো  হওয়া ইউপি তে আমি কোন দিন ক্ষুদিরাম কে বা সুভাষ বোসের সম্বন্ধে তেমন  কিছুই পড়িনি বা পালন করা হোতনা। যা কিছুই জেনেছিলাম সব বাবা-মায়ের সৌজন্য। বিজেপি দলের আসল হর্তাকর্তা শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি , তাঁকে নিয়ে তেমন কিছুই করতে বা বলতে দেখিনি অথচ প্যাটেল কে নিয়ে এলাহি দহরম কান্ড করা হচ্ছে।  আন্দামানের সেলুলার জেলে কিন্তু প্রায় চারভাগের তিন ভাগ  স্বাধীনতা সংগ্রামীরা বাঙালি ছিলেন। আমার কথা নয়, দেয়ালে গাঁথা নামের লিস্টগুলোই তার প্রমাণ। 


তবে একটা ব্যাপারে বিধান রায়ের প্রতি আমার মাথা নত হয়ে যায় যে তিনি প্রচুর বাঙালিদের ওখানে এনে বসবাস করতে দিতে পেরেছিলেন। যতই বাঙালি কে কোনঠাসা করার ধাঁধা থাকুক তখনকার কেন্দ্রের সরকারের বা এখনকার সরকারের, সর্বহারা বাঙালিরা আন্দামান এ ভালো প্রতিপত্তি করে নিয়েছে অর্থনৈতিক ও বাঙালি সংস্কৃতির মাধ্যমে।

মুখ্য ছবি : জমেশ

LET’S KEEP IN TOUCH!

We’d love to keep you updated with our latest news and offers 😎

We don’t spam! Read our privacy policy for more info.