আমি আলাদা করে নারীবাদী হওয়া বন্ধ করেছি। প্রকৃতি যেখানে নিখুঁত ভাবে সমতা বজায় রেখে চলেছে, আমি তার সামনে মাথা নত করেছি এবং নারীবাদী থেকে মানবতা বাদী হওয়া কে বেশি দায়ত্বশীল মনে হয়েছে। কোনো একটি বিশেষ লিঙ্গ কে নিয়ে ভাবলে আমার চলে না আজ। কোনো এককালে, কোন একদিন চলতো , আজ প্রতিটি লিঙ্গকেই সমান মর্যাদায় রেখে কাজ করা টাই – আমার জন্য আমি নির্ধারণ করেছি।

মানব কে সর্ব উপরে তুলে ধরার যে আনন্দ, মানুষ কে তার শারীরিক অঙ্গ-প্রতঙ্গ দিয়ে বিচার না করার – বুদ্ধিমানতা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য। শুধু একটি মানব – ঈশ্বর, বিবর্তনবাদ, ক্রমবিকাশ, অভিব্যক্তিবাদ – যে যেটাই বিশ্বাস করে, সবের ই সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার এই মানব।

আমি অন্ধ নই – নারীর সহনশীলতার ওপর অত্যাচার দেখেছি। অন্য দিকে পুরুষের নিস্তব্দ কর্মক্ষমতা, কি তার পরিবারের প্রতি, কি দেশের প্রত্যন্ত সীমান্তে বসে দিন-রাত দেশের মানুষ এর জীবনের রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি – তাও দেখেছি।

তাই কোনো একজন কে অত্যাচারিত বলে চিহ্নিত করলে – আর একজন কে অত্যাচারী বলেও চিহ্নিত করতে হয়। এখানেই – আমার বিশ্বজনীন কি সর্বজনীন মন্তব্য করা চলে না।

আশ্চর্য্যের বিষয় – ঘরে ঘরে হাজার ঘটে যাওয়া অত্যাচারের ভিতর নারীর ও সমান হাত দেখেছি।ঠিক এই কারণে – সমস্যা নয় সমাধানের কথা বলাই এবং সমাধান বার করাতেই আমি প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। সমাধান ই যখন আমার প্রতিজ্ঞা – নারী / নারীবাদী / নারী-অধিকার এসব আলোচনা র বাইরে আমি আমার কর্মশক্তি, উদ্যম এবং কার্যকলাপ কে সক্রিয় রাখতে চাই। কাজের শুরু হোক নিজের বাড়িতে, নিজের বাসায়, নিজের ঘরে।

সারা পৃথিবী একদিনে পরিবর্তন হয় না, কিন্তু নিজের কুটির টি কে স্বল্প সময়ের ভিতর পরিবর্তন এর ছায়ায় আনা যায়। আমার বাড়ি, আমার পরিবার এর ভিতরের এক-বিন্দু জল ধীরে ধীরে সাগরের রূপ নেয় যদি আমি “প্রতিটি লিঙ্গের প্রতি সম মর্যাদার বীজ” টিকে সঠিক ভাবে, সঠিক জমিতে পুঁতি, এবং নিয়মিত সূর্যের আলো, জল, সার দিয়ে ভালোবাসায় বড়ো করে তুলি।

ছেলের মা আমি – তাই “প্রতিটি লিঙ্গের প্রতি সম মর্যাদার বীজ” টি পোঁতার দায়িত্বও আমার — নারীবাদ এর আওয়াজ, ডাক, আহ্বান, ঘাত – প্রতিঘাত তো এই একটিই জায়গায়। ভবিষ্যতের একটি নিয়মবিরূদ্ধ, অবাধ্য পুরুষ প্রকৃতি র নিখুঁত সমতা যাতে ভাঙতে না পারে, সেই রাস্তা তৈরী করা। তার ছেলে হওয়া যেন আর একটি মেয়ের থেকে বড়ো না হয়ে দাঁড়ায়।

নিজের বাড়িতে সফল ও হয়েছি। নিজের বাবা, নিজের স্বামী, নিজের পুত্র-সন্তান বাড়ির প্রতিটি পুরুষ ই লিঙ্গের প্রতি সম মর্যাদার বীজ এ – বীর্যমান। আপনারাও হয়েছেন কি? কি ভাবে সাহায্যের হাত বাড়াতে পারি – জানলে, আমরা সবাই একসাথে পাশে গিয়ে দাঁড়াবো। ভিক্টিম নয়, ভিক্টিমাইজেশন নয়, চলুন আমরা নব-চেতনার গল্প করি। ভিক্টিমাইজেশনের পুরোনো অধ্যায় ছেড়ে – নব জন্মের, সাহসের এবং সমাধানের চর্চা করি।

ছবি : গর্ডন জনসন

LET’S KEEP IN TOUCH!

We’d love to keep you updated with our latest news and offers 😎

We don’t spam! Read our privacy policy for more info.